1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে জানতে চায় আইএমএফ

৩ নভেম্বর ২০২২

বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের ক্যাপাসিটি চার্জ কমবে কিনা সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চেয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)৷

https://p.dw.com/p/4J0Gu
IWF Report Logo
ছবি: Yuri Gripas/REUTERS

এছাড়াও ভাড়াভিত্তিক (রেন্টাল) বিদ্যুৎকেন্দ্রের আর্থিক প্রভাব, এ নিয়ে সরকারের ভবিষ্যৎ ভাবনা কি, বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভর্তুকির বিকল্প কি, বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ ও বিক্রির ঘাটতি কমাতে কিভাবে মূল্য সমন্বয় করা যায় জানতে চেয়েছে আইএমএফ৷

বুধবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে বৈঠকে ঋণদাতা সংস্থাটির প্রতিনিধিরা ভর্তুকির পরিবর্তে বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে কী হবে, সেটাও জানতে চায় তারা৷

প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক সংবাদে জানা যায়, বৈঠকে মূলত পিডিবির আয়-ব্যয় নিয়েই বিস্তারিত জানতে চেয়েছে তারা৷ পিডিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান৷

বাংলাদেশকে সাড়ে চার কোটি ডলার ঋণ প্রদানের ব্যাপারে আলোচনার জন্য সংস্থাটির এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বর্তমানে ঢাকা সফর করছে৷

পিডিবির কর্মকর্তারা জানায়, বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে তা সুদসহ শোধ করতে হবে৷ ফলে পিডিবির বোঝা আরও বাড়বে৷ আর ভর্তুকি বন্ধ করে দিলে পিডিবি কীভাবে চলবে-আইএমএফের এমন প্রশ্নের জবাবে তারা জানায়, ভর্তুকির বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা পিডিবি মেনে চলবে৷

২০৩০ সালের পর বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভাড়া কমবে কি না, এ বিষয়ে আইএমএফ প্রশ্ন করেছে৷ জবাবে পিডিবি বলেছে, প্রতিবছর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে৷ তাই নতুন নতুন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে৷ এতে বিপুল বিনিয়োগের বিপরীতে কেন্দ্র ভাড়াও বাড়তে থাকবে৷ এটি কমার কোনো সম্ভাবনা এখনই বলা যাচ্ছে না৷ এখানে অনেক হিসাব নিকাশের বিষয় আছে৷

রেন্টাল ও কুইক-রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সরকারের ভাবনা কি জানতে চাইলী পিডিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা আগের চেয়ে কমছে৷ গত অর্থবছরে (২০২১-২২) পিডিবির ২৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির মধ্যে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যাচ্ছে মাত্র ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা৷

বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে বৈঠক

বুধবার বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গেও বৈঠক বসে আইএমএফের প্রতিনিধিদল৷ বিদ্যুৎসচিব হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন একটি দল এতে অংশ নেয়৷ বৈঠকে উপস্থিত বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, মূলত বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে৷ বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব জানতে চেয়েছে আইএমএফ৷

বিদ্যুৎ বিভাগ তাদের জানিয়েছে, বিশ্ববাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম বেড়ে যাওয়ায় খোলাবাজার থেকে আমদানি বন্ধ করা হয়েছে৷ এতে দেশের গ্যাস সরবরাহে সংকট দেখা দিয়েছে৷ আর বিদ্যুৎ উৎপাদনের অর্ধেক আসে গ্যাস থেকে৷ জ্বালানি তেলের দামও বেড়ে গেছে৷

তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে৷ জ্বালানি পরিস্থিতি জানতে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ৷ এ অবস্থায় জ্বালানি বিভাগের সঙ্গে শিগগিরই আইএমএফ প্রতিনিধিদল আলাদা বৈঠক করতে পারে বলে জানা গেছে৷

বিদ্যুৎ উৎপাদনের অবস্থা সম্পর্কে আইএমএফ জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আগামী জানুয়ারির মধ্যে পায়রা, রামপাল ও আদানির তিনটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পুরোদমে বিদ্যুৎ চলে আসবে৷ তারপর বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে সংকট থাকবে না বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ৷

সূত্রগুলো জানায়, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছে আইএমএফ৷ তারা এ বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনা জানতে চাইলে এ খাতের অগ্রগতি ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা৷ আইএমএফ থেকে যে ঋণ পাওয়া যাবে, তার একটি অংশ ব্যয় হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে৷

অর্থনৈতিক সংকট সামলাতে বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা চেয়েছে৷ এসব বিষয়ে আলোচনার জন্য সংস্থাটির এশীয় ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বাধীন একটি দল ঢাকা সফর করছে৷ গত ২৬ অক্টোবর থেকে তারা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করছে৷ আইএমএফ বিভিন্ন খাতের, বিশেষ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ভর্তুকি এবং বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের লোকসান কমাতে সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছে৷

একেএ/কেএম (প্রথম আলো)