বাল্টিক অঞ্চলের সুরক্ষা মজবুত করতে চায় জার্মানি

শুধু ইউক্রেনের উপর হামলা চালিয়েই রাশিয়া ক্ষান্ত হবে না, বাল্টিক অঞ্চলে এমন সন্দেহ বেড়েই চলেছে৷ তাই সেই অঞ্চলে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্য দেশগুলি প্রতিরক্ষা আরো মজবুত করার উদ্যোগ নিচ্ছে৷ ন্যাটোর পূর্ব সীমানায় যতটা সম্ভব শক্তি প্রদর্শন করে রাশিয়ার প্রতি কঠিন বার্তা পাঠাতে চায় সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের দেশ এস্টোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়েনিয়া৷ জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সোমবার সেই অঞ্চল সফর করে ন্যাটোর ‘প্রতিটি ইঞ্চি' রক্ষার অঙ্গীকার জানালেন৷ সেইসঙ্গে তিনি জার্মানির সামরিক সহায়তার আশ্বাসও দিয়েছেন৷

লাটাভিয়ার রাজধানী রিগায় চ্যান্সেলর শলৎস রাশিয়ার ‘ট্যাকটিকাল' পরমাণু অস্ত্রের মহড়ার কড়া নিন্দা করেন৷ তাঁর মতে, বর্তমান যুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়৷ তিন বাল্টিক দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের উপর হামলা চালিয়ে ভুল হিসেব করেছে৷ ইউরোপে বিভাজন সৃষ্টি ও ন্যাটোকে দুর্বল করার বদলে সেই হামলা ঐক্য ও শক্তি আরো জোরালো করেছে৷ বাল্টিক অঞ্চলের নেতারা জার্মান চ্যান্সেলরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ইইউ ও ন্যাটোর উদ্দেশ্যে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় আরো বাড়ানোর আহ্বান জানান৷ তাদের মতে, ইউক্রেনের জয়ের উপর বাল্টিক দেশগুলির নিরাপত্তা নির্ভর করছে৷ শলৎস ও বাল্টিক অঞ্চলের শীর্ষ নেতারা ইউরোপে অস্ত্র উৎপাদন দ্রুত আরো বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেন৷ শলৎস বলেন, প্রতিরক্ষা প্রণালী ও গোলাবারুদ উৎপাদন ইতোমধ্যেই বাড়ানো হয়েছে৷ লিথুয়েনিয়ায় জার্মানির প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংস্থা রাইনমেটালের কারখানা চালু করার পরিকল্পনা চলছে৷

সোমবার সকালে শলৎস লিথুয়েনিয়ায় সামরিক প্রশিক্ষণ এলাকা পরিদর্শন করেন৷ লিখুয়েনিয়ায় জার্মান সেনাবাহিনীর এক স্থায়ী ব্রিগেড মোতায়েনের প্রস্তুতি চলছে৷ ২০২৭ সালের মধ্যে বুন্ডেসভেয়ারের প্রায় ৪,৫০০ সৈন্যের সেই ব্রিগেড সেখানে সংঘাতের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ সম্ভবত বেলারুশ সীমান্তে সেই ইউনিট মোতায়েন করা হবে৷ বর্তমানে জার্মান সৈন্যরা সে দেশে ন্যাটোর মহড়ায় অংশ নিচ্ছে৷ ‘স্টেডফাস্ট ডিফেন্ডার' নামের ন্যাটোর সেই মহড়ায় প্রায় ৯০,০০০ ন্যাটো সৈন্য বৈরি হামলা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ তার মধ্যে জার্মানির ১২,০০০ সৈন্যও রয়েছে৷ শীতল যুদ্ধের পর ন্যাটো কখনো এত বড় আকারের মহড়া আয়োজন করে নি৷

জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র কেনার লক্ষ্যে ইউরোপে রাশিয়ার সম্পদ থেকে পাওয়া রাজস্ব ব্যবহারের পক্ষেও সওয়াল করেছেন৷ তাঁর মতে, সেই রাজস্বের প্রায় ৯০ শতাংশ সেই কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে৷ শলৎস বলেন, শুধু ইইউ নয় বিশ্ব বাজারে যেখানে সম্ভব, সেখান থেকেই ইউক্রেনের জন্য অস্ত্র কেনার উদ্যোগ নিতে হবে৷ উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসে ইইউ-র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল সেই প্রস্তাব পেশ করেছিলেন৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, রয়টার্স)