1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজপাকিস্তান

পাকিস্তানের মেয়েদের শিক্ষা সম্ভব করছেন অটোচালক

১৫ মার্চ ২০২৪

সমাজের অনেক সমস্যার মুখে অসহায় বোধ না করে একাই এগিয়ে এলে কত বড় ফল পাওয়া যায়, পাকিস্তানের এক অটোরিকশা চালক তা দেখিয়ে দিচ্ছেন৷ সেই ‘ভাইজান'-এর কল্যাণে অনেক মেয়ে শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4dfl8
পাকিস্তানের অটোচালক আরাব শাহ
আরাব শাহের কারণে স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হাত থেকে বেঁচে গেছে পেশাওয়ারের অনেক দরিদ্র পরিবারের মেয়েরা।ছবি: Ali Kaifee

পেশোয়ার শহরের উপকণ্ঠে পির বালা এলাকায় আরাব শাহ অটো রিকশা চালান৷ তিনি এলাকার মেয়েদের শিক্ষার লক্ষ্যে নিজের সময় দিয়ে সাহায্য করেন৷ তিনি তাদের বিনামূল্যে পরিবহণের ব্যবস্থা করেন৷ নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে আরাব বলেন, ‘‘আমি প্রায় নয় বছর ধরে বিনামূল্যে মেয়েদের বাসা থেকে তুলে আবার বাসায় নামিয়ে দেওয়ার পরিষেবা দিয়ে চলেছি৷ আমার পাঁচ বোন আছে৷ পরিবহণের অভাবে তারা স্কুলে যেতে পারে নি৷ অন্য মেয়েরাও শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হোক, আমি সেটা চাই না৷ তাই আমি দুইশোরও বেশি মেয়েদের জন্য এই পরিষেবা দিয়ে আসছি৷ আমার পরিষেবা মেয়েদের উপকার করে আসছে৷ আমার সহায়তার কারণে তাদের মধ্যে অনেকে কলেজ, হাই স্কুল এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা করেছে৷ আমার পরিবহণের কল্যাণে এই মেয়েরা শিক্ষার নাগাল পায়৷ প্রায় সবাই অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে৷ বেশিরভাগই যাতায়াতের খরচের কারণে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছিলো না৷ আমি তাদের স্কুলে ভর্তি করিয়েছি এবং বিনামূল্যে পরিবহণের সুবিধা দিয়ে আসছি৷''

গোটা অঞ্চলে নিরাপদ ও সঠিক পরিবহণের অভাব মেয়েদের শিক্ষার পথে বড় অন্তরায়৷ পির বালার অনেক মেয়ে বলে, শাহের পরিষেবার কারণেই তারা স্কুলে যেতে পেরেছে৷ যেমন আরজু আহমেদ নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘‘পরিবহণ নিয়ে আমার সমস্যা ছিল৷ কিন্তু এখন ভাইজানের কল্যাণে সমস্যার সমাধান হয়েছে৷ আমার ভাইয়া খুবই উপকারী৷ তিনি না থাকলে আমাদের পক্ষে শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না৷''

নোশিন খানও আরব শাহের প্রতি কৃতজ্ঞ৷ সে বলে, ‘‘শিক্ষা আমার কাছে সব কিছু৷ আমি ডাক্তার হতে চাই৷ আমি ভাইজানের কাছ গভীরভাবে কৃতজ্ঞ৷ তিনি আমাকে শুধু স্কুলে ভর্তি করান নি, প্রতিদিন আমি যাতে নিরাপদে বাসায় ফিরি, সেটাও নিশ্চিত করেছেন৷ তিনি আমার কাছে আদরের বড় ভাইয়ের মতো৷''

নিজের কাজ ও আন্তরিকতার দৌলতে আরাব শাহ মেয়েদের পরিবারের আস্থা ও শ্রদ্ধাও অর্জন করেছেন৷ আরজু আহমেদের বাবা মহাম্মাদ রেহান জানান, ‘‘আমার তিন মেয়ে৷ একজন সবে প্রাইমারি স্কুল শেষ করেছে৷ আরাব শাহের সহায়তায় সে হাই স্কুলে যাচ্ছে৷ বাকি দুই মেয়ে এখানকার প্রাইমারি স্কুলে পড়ছে৷ আরাব শাহের ভূমিকা বড় ভাইয়ের মতো৷ তার কল্যাণেই আমার মেয়েরা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে অনেক সাহায্য পাচ্ছে৷''

পির বালায় এই কাজের জন্য শাহ অনেক সম্মান ও স্বীকৃতি পাচ্ছেন৷ নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তানে মেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত৷ গোটা পাকিস্তানে পরিবহণ নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ করা আমার লক্ষ্য৷ সব বঞ্চিত শিক্ষার্থীর কাছে সেই পরিষেবা যেন পৌঁছে যায়৷''

পাকিস্তানের শিক্ষানুরাগী অটোরিকশাচালকের গল্প

আলি কাইফি/এসবি