1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টাউরুস প্রশ্নে অপ্রত্যাশিত সমর্থন পেলেন শলৎস

১৯ মার্চ ২০২৪

‘শান্তির চ্যান্সেলর' হিসেবে পূর্বসূরীর প্রশংসা জার্মানির সরকার প্রধান শলৎসের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠছে৷ ইউক্রেনের জন্য টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র নাকচ করে তিনি চাপের মুখে৷ মঙ্গলবার সার্বিক সমাধানসূত্রের আশা করছেন শলৎস৷

https://p.dw.com/p/4dstT
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস
ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরেই জার্মানির স্থান থাকলেও চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এক ‘লাল সীমা' অতিক্রম করতে নারাজছবি: Michael Kappeler/dpa/picture alliance

ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঠিক পরেই জার্মানির স্থান থাকলেও চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এক ‘লাল সীমা' অতিক্রম করতে নারাজ৷ আপাতত টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ নিয়ে তাঁর আপত্তি জার্মানির জোট সরকারের একাংশ ও প্রধান বিরোধী শিবিরের মধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি করছে৷ শলৎস বলেছেন, জার্মানি যাতে যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে না পড়ে, সরকার প্রধান হিসেবে তা নিশ্চিত করা তার দায়িত্ব৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর পথ খোলা রাখার যে প্রস্তাব দিয়েছেন, শলৎস তাও নাকচ করে দিয়েছেন৷ তার মতে, কোনো অবস্থায় ইউক্রেনে জার্মানির সৈন্য পাঠানো হবে না৷

প্রাক্তন জার্মান চ্যান্সেলর গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার চাপের মুখেও শলৎসের এই অনড় অবস্থানের প্রশংসা করেছেন৷ সংবাদ সংস্থা ডিপিএ-কে তিনি বলেন, তিনি বর্তমান জার্মান চ্যান্সেলের কাছে ঠিক এমন আচরণেরই প্রত্যাশা করেন৷ ‘শান্তির চ্যান্সেলর' হিসেবে শলৎসের তকমা তিনি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন৷ উল্লেখ্য, ১৯৯৮ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কার্যকালে শ্র্যোডার নিজে ইরাক যুদ্ধে অংশ না নিয়ে অ্যামেরিকার রোষের মুখে পড়েছিলেন৷ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে নিবিড় বন্ধুত্ব ও ঘনিষ্ঠতার কারণে আজ তিনি নিজের দল এসপিডি ও রাজনৈতিক আঙিনায় কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছেন৷ ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে তিনি ফ্রান্স ও জার্মানির যৌথ উদ্যোগে রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছেন৷

বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্র্যোডারের সমর্থন শলৎসের জন্য যে মোটেই স্বস্তির কারণ হতে পারে না, তা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী মার্কুস স্যোডার বলেন, গেয়ারহার্ড শ্র্যোডারের প্রশংসা দেখিয়ে দিচ্ছে যে জার্মান চ্যান্সেলর ভুল পথে চলেছেন৷ তার মতে, শলৎসের সেই প্রশংসা প্রত্যাখ্যান করা উচিত৷ সরকারের উপ মুখপাত্র ক্রিস্টিনে হফমান অবশ্য দাবি করেছেন, শ্র্যোডারের মন্তব্য শলৎসের উপর কোনো প্রভাব ফেলবে না৷ ইউক্রেনের প্রতি তার স্পষ্ট সমর্থন নিয়ে কোনো অস্পষ্টতা নেই৷

টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও ইউক্রেনকে কীভাবে আরো অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করা যায়, সে বিষয়ে জার্মানিসহ পশ্চিমা দেশগুলি আবার আলোচনায় বসছে৷ বিশেষ করে মার্কিন কংগ্রেসে বিশাল সামরিক সহায়তা প্যাকেজ আটকে থাকায় ইউক্রেন যুদ্ধক্ষেত্রে যে সমস্যার মুখে পড়েছে, তা আংশিকভাবে দূর করতে জার্মানির রামস্টাইন বিমান ঘাঁটিতে মঙ্গলবার আলোচনায় বসছেন প্রায় ৫০টি দেশের প্রতিনিধি৷ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের আমন্ত্রণে তারা সহায়তার ক্ষেত্রে আরো সমন্বয়ের চেষ্টা করছেন৷ জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউসও সেই আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন৷ ২০২২ সালের এপ্রিল মাস থেকে রামস্টাইন ফরম্যাট নামের এই বৈঠক আয়োজন করা হচ্ছে৷

ইউক্রেনকে শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের প্রশ্নে জার্মানি দ্বিধা করলেও ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মতো দেশ আরো সাহসি পদক্ষেপ নিতে চায়৷ গত শুক্রবার ফ্রান্স ও পোল্যান্ডের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক আলোচনার পর জার্মান চ্যান্সেলর শলৎসও ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে এক ‘সুদূরপ্রসারী জোট'-এর ঘোষণা করেছেন৷ রামস্টাইনে এমন এক সমাধানসূত্র উঠে আসবে বলে শলৎস আশা করছেন৷ তিনি বরাবর ‘একলা চলো রে' নীতির বদলে যৌথ পদক্ষেপের পক্ষে সওয়াল করে এসেছেন৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)