1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির নেশার জগতে ক্র্যাক ও ফেন্টানিলের ভয়াবহ বিস্তার

১৮ মার্চ ২০২৪

ক্র্যাক এবং ফেন্টানিলের নেশা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে জার্মানিতে৷ বিশ্লেষকদের আশঙ্কা- এই দুই ‘সিন্থেটিক ওপিওড'-এর সামাজিক প্রভাব ভয়াবহ হতে পারে৷

https://p.dw.com/p/4drlu
ব্রাজিলের সাও পাওলোতে ক্র্যাক কোকেন সেবনের চিত্র
কোকেন থেকে তৈরি নেশাদ্রব্য ক্র্যাক জার্মানিতে খুব অল্প সময়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছেছবি: Andre Penner/AP/picture alliance

ক্র্যাক এবং ফেন্টানিল তুলনামূলকভাবে খুব সস্তা নেশাদ্রব্য৷ তাই একবার ধরলে সেবনকারী সহজে তা ছাড়তে পারে না, অল্প দিনেই সেবনের মাত্রা পৌঁছে যায় সর্বোচ্চ সীমায়৷

কোকেন থেকে তৈরি নেশাদ্রব্য ক্র্যাক জার্মানিতে খুব অল্প সময়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে৷

দেখতে অনেকটা সাদা পাথরের মতো বলে কোনো কোনো সেবনকারী এর নাম দিয়েছেন ‘হোয়াইট', কেউ আবার একে ডাকেন ‘স্টোনস'৷ কোকেন , বেকিং সোডা আর পানির মিশ্রণ ৯৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) উত্তাপে গরম করলেই হয়ে যায় ‘হোয়াইট' বা ‘স্টোনস'৷

ড্যুসেলডর্ফার ড্রোগেনহিল্ফে (ড্যুসেলডর্ফ ড্রাগ সেন্টার)-এর মিশায়েল হারবাউম বলেন, ‘‘ক্র্যাক ধুমপানযোগ্য৷ এটা খুব দ্রুত ‘কিক' (নেশার কাঙ্খিত স্তর)-এ নিয়ে যায়৷'' বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাত্র ১০ সেকেন্ডেই সেই কিক-এর আনন্দ দিতে পারে ক্র্যাক৷

২০ বছর ধরে ড্যুসেলডর্ফার ড্রোগেনহিল্ফেতে কাজ করছেন মিশায়েল হারবাউম৷শুরুর দিকে ড্রাগ কনজিউম রুম, অর্থাৎ প্রশিক্ষিত কর্মীদের সহায়তায় পরিমাণমতো মাদক সেবনের কেন্দ্রে কাজ করতেন৷ এখন এমন একটি কেন্দ্রের প্রধান তিনি৷ মিশায়েল জানান, ২০১৭ সালে তার কেন্দ্রে মাত্র কয়েকশ মানুষ ক্র্যাক সেবন করতেন, ২০২৩ সালে সেই সংখ্যাটাটই ৩১ হাজার ছাড়িয়ে যায়৷

ক্র্যাক সেবনের সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো এতে যেমন দ্রুত নেশা হয়ে যায়, তেমনি নেশা ছুটেও যায় দ্রুত৷ ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আবার অস্থির হয়ে ওঠে মন৷

অন্যদিকে ফেন্টানিল মূলত এক ধরনের ব্যথানাশক ঔষধ৷ এ ঔষধ সবার জন্য নয়৷ বিশেষ করে মৃত্যুপথযাত্রী ক্যান্সাররোগীরা ব্যথার কষ্ট থেকে বাঁচতে ফেন্টানিল নিয়ে থাকেন৷ সেই ঔষধও হয়ে গেছে নেশাদ্রব্য৷জার্মানিতে নেশাদ্রব্য হিসেবে এর ব্যবহারও বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে৷

ফেন্টানিল সেবন করা হয় হেরোইনে মিশিয়ে৷

জার্মানির এইডস অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি ১৭টি ড্রাগ কনজিউম সেন্টারের হেরোইন পরীক্ষা করে অন্তত ৩.৬%-এর মধ্যে ফেন্টানিল মেশানো৷

মাদক সেবনে মৃত্যু

জার্মানিতে মাদকসেবনজনিত মৃত্যু বাড়ছে৷ ২০২২ সালে মাদক কেড়ে নেয় ২০০০-এর মতো মানুষের প্রাণ৷ গত দুই দশকের মধ্যে আর কোনো বছরে মাদকের কারণে এত মানুষ মারা যায়নি৷ মাদকসেবনের কারণে মারা যাওয়া প্রায় দুই হাজার মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণ কেড়েছে হেরোইন বা দীর্ঘ দিন সেবন করা অন্য কোনো মাদক৷ 

কোকেন এবং ক্র্যাক সেবনের কারণে মৃতের সংখ্যা ৪০০-র চেয়ে একটু বেশি হলেও ভবিষ্যতে সংখ্যাটা অনেক বাড়তে পারে৷ নেশায় আসক্তির গবেষক ডানিয়েল ডাইমেল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘ফ্রাঙ্কফুর্ট, হামবুর্গ এবং হানোফারের মতো বড় শহরগুলোতে গত ২০ বছর ধরেই ধীরে ধীরে বড় থেকে আরো বড় সমস্যা হয়ে উঠছে ক্র্যাক৷তবে ইউরোপ কোকেনে সয়লাব হয়ে যাওয়ায় ২০১৬ সালের পর থেকে সারল্যান্ডের মতো রাজ্যেও কোকেন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে৷''

জার্মানিতে মাদকের বাজারের দ্রুত বিস্তৃতির কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, "কলম্বিয়ার কোকেন উৎপাদন বেশ দ্রুত বাড়ছে৷ সে কারণে এখানেও (জার্মানি) মাদকের বাজার দ্রুত প্রসারিত হচ্ছে৷''

জার্মানিতে কোকেন আসে জলপথে৷ বড় চালানগুলো আসে বেলজিয়ামের অ্যান্টোয়ার্প, নেদারল্যান্ডসের রটারডাম এবং জার্মানির হামবুর্গ বন্দর দিযে৷

অলিভার পিপার/ এসিবি

মাদকপাচার রোধে নতুন বন্দর জোট ইউরোপে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য