1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানির চমকপ্রদ গাড়ি মিউজিয়াম

১৭ নভেম্বর ২০২৩

ভিনটেজ কার, মোটর রেসিং, সবচেয়ে দ্রুতগামী গাড়ির মতো বিষয়ে আগ্রহ থাকলে জার্মানির জাতীয় গাড়ি মিউজিয়ামে ঢুঁ মারা উচিত৷ প্রায় অমূল্য এই ব্যক্তিগত সংগ্রহে ইতিহাসের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনারও চিহ্ন পাওয়া যাবে৷

https://p.dw.com/p/4Z4eA
জার্মানির গাড়ির জাদুঘরে একটি গাড়ি
জার্মানির গাড়ির জাদুঘরে একটি গাড়িছবি: The Loh Collection

চোখ ধাঁধানো রেসিং কার, বিরল যান, চকচকে ভিন্টেজ কার৷ জার্মানির হেসে রাজ্যে সদ্য উন্মোচিত ‘জাতীয় গাড়ি মিউজিয়াম'-এ প্রায় দেড়শো যান শোভা পাচ্ছে৷ মিউজিয়ামের কিউরেটর ও সহ নির্বাহী পরিচালক ফ্লোরিয়ান উর্বিচ বলেন, ‘‘গাড়িগুলি সব খাঁটি৷ কলকবজাও ভালো অবস্থায় রয়েছে৷ পথে নামার জন্যও প্রস্তুত৷ দর্শকদের স্বার্থে বর্তমানে অবশ্যই সেগুলি মিউজিয়ামে রয়েছে৷ আমরা সেগুলি রক্ষাণাবেক্ষণ করে চালানোর উপযুক্ত করে রাখি৷''

কর্ণধার হিসেবে ফ্লোরিয়ান উর্বিচ প্রত্যেকটি গাড়ির নানা খুঁটিনাটী বিষয় সম্পর্কে জানেন৷ তাঁর ঝোলায় অনেক গল্পও রয়েছে৷ যেমন এই ফর্মুলা ওয়ান ফেরারি স্পোর্টস কার কিংবদন্তীর মতো৷ ২০০০ সালে মিশায়েল শুমাখার এটি চালিয়ে তাঁর তৃতীয় বিশ্বকাপ জেতেন৷ ফ্লোরিয়ান উর্বিচের মতে, ‘‘ফর্মুলা ওয়ান অবশ্যই স্পোর্টস কার জগতের সেরা প্রতিযোগিতা৷ সর্বকালের সেরা রেসার মিশায়েল শুমাখারের সঙ্গে ফেরারির বিশেষ সংযোগ রয়েছে৷ ফলে এখানে বিশেষ মেলবন্ধন ঘটেছে৷ গাড়ি বেচার ছোট বিজ্ঞাপনে এমনটা পাওয়া যায় না৷ কিন্তু ৩৫ বছর ধরে গাড়ি সংগ্রহ করলে যথেষ্ট যোগাযোগ গড়ে ওঠে৷ অন্যান্য সংগ্রহকারীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় এবং বিরল যান সংগ্রহের সুযোগ পাওয়া যায়৷''

‘দ্য লো কালেকশন' মিউজিয়ামের ডাকনাম হয়ে উঠেছে৷ এটি কোটিপতি ফ্রি়ডহেল্ম লো-র ব্যক্তিগত সংগ্রহ৷ ৩৫ বছর ধরে তিনি বিশেষ গাড়ির সন্ধান করে চলেছেন৷ বেনৎস ভিক্টোরিয়া মডেলটি অত্যন্ত পুরানো ও বিরল এক যান৷ ১৮৯৬ সালের গাড়িটি একেবারে অক্ষত অবস্থায় রয়েছে৷ উর্বিচ বলেন, ‘‘ভিক্টোরিয়া বা মিশায়েল শুমাখারের বিশ্বকাপের গাড়ি যে এখানে রয়েছে, সেটা মোটেই কাকতালীয় নয়৷ সাধারণ পুরানো গাড়ি বা যে কোনো ফর্মুলা ওয়ান রেসিং কার সংগ্রহে রাখা হয় নি৷ খুঁটিনাটী বিষয়ের প্রতি তাঁর ভালোবাসা মিউজিয়ামটিকে আজকের রূপ দিয়েছে৷''

দারুণ এক গাড়ি মিউজিয়াম

প্রদর্শিত গাড়িগুলি সম্পর্কে ধারণা পেতে মিউজিয়ামের নিজস্ব অ্যাপ সাহায্য করে৷ সেখানে একের পর এক স্বপ্নের গাড়ি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে রয়েছে৷ সংগ্রহের আর্থিক মূল্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া কঠিন৷ যেমন মাত্র একবার তৈরি মাইবাখ এক্সেলেরো-র দাম কম করে হলেও ৮০ কোটি ইউরো৷ ২০০৫ সালের এই যানটি ঘণ্টায় ৩৫১ কিলোমিটার গতিবেগ ছুঁয়ে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল৷ তবে সংগ্রহে আরো দ্রুত গতির গাড়িও রয়েছে৷ কিউরেটর ও সহ নির্বাহী পরিচালক ফ্লোরিয়ান উর্বিচ বলেন, ‘‘এখানে বুগাটি ভাইরন সুপার স্পোর্টস মডেল শোভা পাচ্ছে৷ এই মডেলের মোট ৪৮টি গাড়ি তৈরি করা হয়েছিল৷ ২০১২ সালে এটি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগামী গাড়ি ছিল৷ ঘণ্টায় ৪৩১ কিলোমিটার গতির কারণে গিনিস বুকে এটির নাম উঠেছিল৷ তবে নিরাপত্তার স্বার্থে বাজারে আনা গাড়ির গতি ৪১৫ কিলোমিটারে সীমিত রাখা হয়েছিল৷''

ল্য ম্যাঁসের ২৪ ঘণ্টার রেসকে উৎসর্গ করে এক বিশেষ প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে৷ সেটা ছিল রেসিং জগতের চমকপ্রদ ঘটনা৷ দূরপাল্লার রেসিংয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে ২১টি বোলিডের মধ্যে ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে৷ প্রত্যেকটি রেসই ছিল প্রযুক্তির সম্ভাবনার সীমার মাইলফলক৷ উর্বিচ বলেন, ‘‘বর্তমানে আমাদের মিউজিয়ামের সিংহভাগ জুড়েই কম্বাসচন প্রযুক্তি প্রাধান্য পেলেও আমরা কিন্তু মিউজিয়াম হিসেবে ইলেকট্রোমোবিলিটি সম্পর্কে উদাসীন নই৷ আমাদের আশা, জার্মানির গাড়ি শিল্প এ ক্ষেত্রে সমান তালে এগিয়ে যেতে পারবে৷''

জাতীয় গাড়ি মিউজিয়ামের দৌলতে ইউরোপের অন্যতম বিশাল ব্যক্তিগত গাড়ির সংগ্রহ সাধারণ দর্শকদের নাগালে চলে আসছে৷ অটোমোবাইল জগতের ইতিহাস এভাবে স্পষ্ট হয়ে উঠছে৷

পিয়ের প্রেচ/এসবি