1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইইউতে রাশিয়া ও চীনের গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে শঙ্কা

২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইউরোপীয় সংসদ, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধে রাশিয়া ও চীনের গুপ্তচরবৃত্তির কয়েকটি অভিযোগ সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে৷ জুনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইইউ নির্বাচনেও হস্তক্ষেপের আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/4fAP6
প্রতীকী ছবি
লাটভিয়ার ইউরোপীয় সাংসদ টাটিয়ানা আশডানোকা কয়েকবছর ধরে রুশ গোয়েন্দাদের সঙ্গে কাজ করছেন বলে এ বছরের শুরুতে খবর প্রকাশিত হয়ছবি: McPHOTO/blickwinkel/picture alliance

এই পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা৷

ইউরোপীয় সংসদের সদস্য ও তাদের কর্মীরা কাতার, মরক্কো ও মৌরিতানিয়ার কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন বলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে খবর প্রকাশিত হয়েছিল৷ ইউরোপীয় সংসদের উপর ঐ তিন দেশের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় এমন লেনদেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷

লাটভিয়ার ইউরোপীয় সাংসদ টাটিয়ানা আশডানোকা কয়েকবছর ধরে রুশ গোয়েন্দাদের সঙ্গে কাজ করছেন বলে এ বছরের শুরুতে খবর প্রকাশিত হয়েছে৷

গতমাসে চেক প্রজাতন্ত্র ‘ভয়েস অফ ইউরোপ' নামের একটি নিউজ আউটলেট নিষিদ্ধ করে৷ অভিযোগ, তাদের কার্যক্রমে রাশিয়ার প্রভাব ছিল৷ এর কয়েকদিন পর বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্দা ডে ক্রো জানান, ‘রুশ প্রোপাগান্ডা প্রচার করতে' রাশিয়া ইউরোপীয় সাংসদদের অর্থ দিয়েছে৷

আর এ সপ্তাহে জার্মানির উগ্র ডানপন্থি ইউরোপীয় সাংসদ মাক্সিমিলিয়ান ক্রাহর সহকারী জিয়ান জি.-কে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ জার্মানির নাগরিক জিয়ান জি. চীনা গোয়েন্দাদের হয়েও কাজ করতেন বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ৷

বুধবার ক্রাহর বিরুদ্ধেও প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয়েছে৷ কারণ, সম্প্রতি জার্মান ও চেক প্রজাতন্ত্রের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, রুশপন্থি বার্তা প্রচার করতে তিনি অর্থ নিয়েছেন৷ তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ক্রাহ৷

এদিকে, এ সপ্তাহে জার্মানি ও যুক্তরাজ্যে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তারা চীনের হয়ে কাজ করছিলেন বলে অভিযোগ৷ বেইজিং এই অভিযোগ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে৷

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনের উপর হামলার পর প্রথম ১১ মাসে ৪৯০ জন রুশ কূটনীতিককে ইইউর বিভিন্ন দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল৷ তাদের বেশিরভাগই গুপ্তচরবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে সন্দেহ করা হয়৷ ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে এসব তথ্য জানিয়েছিল ‘পোলিশ ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স' পিআইএসএম৷ সংস্থার কর্মকর্তা এলসবিয়েটা কাসা বলেন, পুরো ইইউ জুড়ে রুশ গুপ্তচরবৃত্তি চললেও ‘ইউরোপের যেসব দেশে ন্যাটোর অবকাঠামো ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সদরদপ্তর রয়েছে সেসব দেশে তারা বেশি সক্রিয়'৷

ইইউর বেশিরভাগ সংস্থা ও ন্যাটোর সদরদপ্তর বেলজিয়ামে অবস্থিত৷ সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী ক্রো গত সপ্তাহে এক্স-এ লিখেছেন, ‘‘আমরা যখন কথা বলছি তখনও ইইউর নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ঘটে চলেছে৷ তারা আমাদের গণতন্ত্রকে ব্যাহত করতে চায়৷''

সুইডিশ ডিফেন্স রিসার্চ এজেন্সি বলছে, ২০১০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে যত ইউরোপীয় নাগরিক গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন তাদের বেশিরভাগের সঙ্গে মস্কোর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে৷

কী ভাবছে ইইউ সংসদ?

গুপ্তচরবৃত্তি ঠেকাতে ইউরোপীয় সংসদ সদস্যরাষ্ট্রগুলোর নিজস্ব কর্তৃপক্ষের তদন্তের উপর নির্ভর করে বলে এক বিবৃতিতে ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন ইইউ সংসদের এক মুখপাত্র৷

এছাড়া তিনি বলেন, ইউরোপের রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে ক্রেমলিনের প্রচার বাড়াতে সহায়ক হওয়ার অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে ইইউ সংসদ৷ চীনের হস্তক্ষেপের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি৷

এদিকে, রাশিয়ার কার্যক্রমের প্রভাব কমাতে ইইউ সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে এক চিঠিতে লিখেছেন বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী ক্রো ও চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী পেটার ফিয়ালা৷ এছাড়া প্রয়োজনে আরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়ারও পরামর্শ দেন তারা৷ সম্প্রতি গঠন করা ‘ইউরোপিয়ান পাবলিক প্রসিকিউটর্স অফিস' এসব কার্যক্রমের বিচার করতে পারে কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে বলেছেন ক্রো ও ফিয়ালা৷

ইইউর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে কাউন্টার-টেরোরিজম বিষয়ে সহযোগিতা বাড়লেও গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের বিষয়টি এখনও অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মনে করা হয়৷ এই বিষয়ে উন্নতির জায়গা রয়েছে বলে মনে করেন পিআইএসএম কর্মকর্তা এলসবিয়েটা কাসা৷ এক্ষেত্রে ইইউর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ে কাজ করা সংস্থা ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিস'কে কাজে লাগানো যেতে পারে বলে মনে করেনি তিনি৷

এলা জয়নার, ব্রাসেলস/জেডএইচ