অস্কারে জার্মানির যত সাফল্য
৯৬তম অস্কারে তিনজন জার্মান মনোনয়ন পেলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ভাগ্যে জোটেনি পুরস্কার৷ তবে অস্কার নামে খ্যাত অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের সূচনালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত ৫৬টি পুরস্কার জিতেছেন জার্মানরা৷
অস্কারের প্রথম আসরে
বিখ্যাত জার্মান অভিনেতা এমিল ইয়ানিংস৷ হাইনরিশ মানের উপন্যাস ‘প্রফেসর উনরাট’ অবলম্বনে নির্মীত চলচ্চিত্র ‘দ্য ব্লু এঞ্জেল’-এ অভিনয়ের জন্য তিনি সর্বাধিক খ্যাত৷ তবে ১৯২৯ সালে নির্বাক চলচ্চিত্র ‘দ্য সেইলর হু ফেল ফ্রম গ্রিস উইথ দ্য সি’ এবং ‘দ্য লাস্ট কমান্ডের’ জন্য সেরা অভিনেতার অস্কার জিতেছিলেন তিনি৷ সেটি ছিল অস্কারের প্রথম আসর৷
সবচেয়ে সফল অভিনেত্রী
লুইসা রাইনার জন্ম ১৯১০ সালে জার্মানির ড্যুসেলডর্ফে৷ ১৯২৭ সালে বাবার আগ্রহে অভিনয়ে হাতখড়ি হয় তারা৷ ১৯৩৫ সালে হলিউডে চুক্তিবদ্ধ হয়ে নাৎসি নিধনযজ্ঞের হাত থেকে রক্ষা পান এই ইহুদি নারী৷ দুই-দুইবার তিনি সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন অস্কারে৷
তথ্যচিত্রে দুই
জার্মান প্রাণিবিজ্ঞানী বের্নহার্ড জিম্যাকের পূর্ব আফ্রিকায় গবেষণা এবং এক উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় সন্তানের মৃত্যুকে ঘিরে নির্মিত হয়েছিল তথ্যচিত্র ‘সেরেনগেটি শ্যাল নট ডাই’৷ ২০১৫ সালে অ্যামেরিকান হুইসেলব্লোয়ার স্নোডেনকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রের আগ পর্যন্ত এটিই ছিল এই বিভাগে জার্মানির একমাত্র অস্কার৷
প্রথম সেরা চলচ্চিত্র
জার্মানির নোবেলজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের ‘দ্য টিন ড্রাম’ (ডি ব্লেশট্রমেল) অবলম্বনে ১৯৭৯ সালে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন ফল্কার শ্ল্যুনডর্ফ, যা অস্কারে সেরা চলচ্চিত্রের খেতাব জেতে৷
ক্যামেরার জন্য অস্কার
জার্মান চিত্রগ্রাহক মিশায়েল বালহাউস তিন-তিনবার অস্কারের নমিনেশন পেলেও একবারও পুরস্কার জোটেনি ভাগ্যে৷ তবে যেই ক্যামেরার সাথে তাকে এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে সেই অ্যারিফ্লেক্স থার্টি ফাইভের নির্মাতা জার্মান ডিজাইনার এরিশ ক্যাস্টনার তিনবার অস্কার জিতেছেন, যা অস্কারে এখন জার্মানদের রেকর্ড৷
দ্বিতীয় সেরা চলচ্চিত্র
বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রে দ্বিতীয় অস্কারের জন্য ২৩ বছর অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে জার্মানিকে৷ ১৯৩৮ সালে নাৎসিদের হাত থেকে পালিয়ে কেনিয়া যাওয়া স্টেফানি সোয়াইগের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ অবলম্বনে নির্মীত চলচ্চিত্র ‘নো হোয়্যার ইন আফ্রিকা’ (নিরগেন্ডভো ইন আফ্রিকা) ২০০৩ সালে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটায়৷ চলচ্চিত্রটির পরিচালক ক্যারোলিন লিংক (ছবিতে)৷
দ্য লাইভস অব আদার্স
জার্মানিতে তৃতীয় সেরা চলচ্চিত্রের অস্কারটি আসে চার বছরের মাথায়৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পূর্ব জার্মানির গোয়েন্দা বিভাগ স্টাসির অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অবলম্বনে নির্মীত চলচ্চিত্র ‘দ্য লাইভস অব আদার্স’ (ডাস লেবেন ডেয়ার আন্ডেরেন) সেই সম্মান বয়ে আনে৷ ডেব্যুতেই বাজিমাত করেন ফ্লোরিয়ান হেনকেল ফন ড্যোনার্সমার্ক৷
দ্যা লায়ন কিং
ডিজনির চলচ্চিত্র দ্যা লায়ন কিং-এর থিম সংটি লিখেছিলেন জার্মান কম্পোজার হান্স সিমার৷ ১৯৯৫ সালে সেটি অস্কার জেতে৷ ২০২২ সালে সিমার দ্বিতীয়বারের মতো অস্কার পান বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি নির্ভর চলচ্চিত্র ‘ডুন’ এর জন্য৷
দুইবার করে পাঁচজন
দুইবার করে অস্কার জিতেছেন এমন পাঁচ জার্মান নাগরিকের মধ্যে একজন গের্ড নেফৎসা৷ তার মধ্যে একটি পেয়েছেন তিনি ‘ডুন’ এ সেরা ভিস্যুয়াল ইফেক্ট-এর জন্য৷ একই বিভাগে প্রথম পুরস্কারটি পেয়েছিলেন তিনি ব্লেড রানার-২০৪৯ এর জন্য৷
মোট ৫৬টি
জার্মানির জন্য সবশেষ অস্কার নিয়ে এসেছেন এর্নেস্টিনা হিপা, ক্রিস্টিয়ান এম গোল্ডবেক (প্রোডাকশন ডিজাইন) এবং ফল্কার বার্টেলমান (সংগীত)৷ তিনজনই পুরস্কার পেয়েছিলেন ‘অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’-এর জন্য৷ এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে অস্কারের ৯৬টি আসরের মধ্যে ৫৬টি সম্মাননা পেয়েছে জার্মানি৷