1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গঙ্গার পানি শোধন

৪ আগস্ট ২০১২

দুই দশকের বেশি সময় আগে গঙ্গার পানি শোধনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে ভারত সরকার৷ এক্ষেত্রে জার্মানিও সহায়তা করেছে৷ কিন্তু এখনও পুরোপুরি সাফল্য মেলেনি৷ এবার বিশ্ব ব্যাংক এবং ইসরায়েলের সহায়তায় নতুন উদ্যমে শুরু হচ্ছে এই কাজ৷

https://p.dw.com/p/15jdi
ছবি: picture-alliance/dpa

হিমালয়ের পশ্চিমাঞ্চল থেকে শুরু হয়ে ভারতের উত্তরাঞ্চল দিয়ে প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে গঙ্গা৷ এর দুই পাড়ের শহর আর গ্রামে বাস করে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মানুষ৷ এমনকি তাদের অনেকেরই জীবনযাত্রা এই গঙ্গার উপর নির্ভরশীল৷ বিশ্বের বৃহত্তম ২০টি নদীর একটি এই গঙ্গা৷ কিন্তু খরার মৌসুমে এই গঙ্গা যেন শুধু বর্জ্য প্রবাহিত হওয়ার মতো সরু নালায় পরিণত হয়৷ বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত নদীগুলোরও একটি গঙ্গা৷

এক সময়ের পবিত্র এবং জীবন দানকারী হিসেবে বিবেচিত গঙ্গার পানি এখন মানুষের মল, মূত্র, বর্জ্য এবং রোগ জীবাণুতে ভরপুর৷ তাই দূষিত পানিকে পরিষ্কার করে গঙ্গার রূপ, সৌন্দর্য এবং হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে আনার জন্য আড়াই বিলিয়ন ইউরোর প্রকল্প হাতে নিয়েছে ভারত৷ এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে সোয়া আটশ' মিলিয়ন ইউরো ঋণ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে বিশ্ব ব্যাংক৷ আর ভারতকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে মধ্যপ্রাচ্যের ছোট্ট দেশ ইসরায়েল৷

ভারত সরকার ২০২০ সালের মধ্যে নিশ্চিত করতে চায় যে, শিল্প বর্জ্য কিংবা পৌর এলাকার অপরিশোধিত পানি গঙ্গার পানিতে গিয়ে মিশবে না৷ তবে গঙ্গার পানি পরিশোধনে সহায়তাকারী ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান ইসরায়েল নিউ টেক-এর প্রধান ওডেড ডিস্টেল-এর মতে, গঙ্গার পানি পরিষ্কার করতেই প্রায় ২০ বছর লেগে যাবে৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘এটি অনেক বড় প্রকল্প৷ এটির মধ্যে দূষিত পানি পরিশোধন এবং সেচ ব্যবস্থাসহ পানি ব্যবস্থাপনার কাজ রয়েছে৷ রয়েছে প্রযুক্তিগত দিকও৷''

Fluss Indien Ganges
হিন্দুদের কাছে এই নদী পবিত্র হওয়া সত্ত্বেও দূষণ বেড়েই চলেছেছবি: AP

তবে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ সহায়তা নিয়ে গঙ্গা পরিষ্কারে নামার ফলে ভারতের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী চাষাবাদ পদ্ধতিতেও ঘটবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন৷ কারণ এতদিন ভারতের কৃষিজীবী মানুষ সাধারণত সেচের জন্য মৌসুমি বৃষ্টিপাতের উপর নির্ভর করতো৷ এর ফলে কৃষি জমি থেকে রাসায়নিক পদার্থ ধুয়ে গঙ্গায় চলে যেত৷ কিন্তু এখন সেই ধারা পাল্টাতে পরীক্ষা চালাচ্ছে ইসরায়েলি-ভারতীয় যৌথ প্রতিষ্ঠান নন্দনজায়েন৷ তারা ভারতে চুইয়ে পড়া সেচ প্রযুক্তির যথার্থতা খতিয়ে দেখছে৷ ক্ষুদ্রসেচ নামে পরিচিত ইসরায়েলি এই প্রযুক্তি পানি এবং সার উভয় সাশ্রয় করে৷ এই পদ্ধতিতে পানি চুইয়ে চুইয়ে গাছের মূলে পৌঁছে যায়৷

নন্দনজায়েন-এর পরিচালক আমনন ওফেন বলেন, এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যে ভারতের কৃষি কাজে পরিবর্তন ঘটাতে শুরু করেছে৷ তিনি আরো জানান, ‘‘বর্তমানে ভারতে সেচ কাজে খরচ হয় বছরে ০.৫ বিলিয়ন ডলার৷ তবে আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে সেটা দেড় বিলিয়ন ডলারে পৌঁছবে৷'' এ কারণেই এখন বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান ভারতে তাদের পরিষেবা সম্প্রসারণ করছে বলেও উল্লেখ করেন ওফেন৷

এছাড়া গঙ্গার পানি পরিশোধন করতে এর তীরবর্তী এলাকায় বেশ কিছু প্রাকৃতিক জলাশয় ও লেক তৈরির কথা বলছে ইসরায়েলের জীব-প্রকৌশল বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘ওয়াটার রিভাইভ'৷ এক্ষেত্রে প্রথমে গঙ্গা থেকে দূষিত পানি একটি নালা দিয়ে সেই জলাশয়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং আবার সেই পানি গঙ্গায় ফেরত পাঠানোর আগেই পরিশোধন করে ফেলা হবে৷ এই পদ্ধতিতে ইসরায়েলের ইয়ারকন নদীর পানি পরিশোধন করতে আশিটিরও বেশি জলাশয় তৈরি করা হয়৷ ‘ওয়াটার রিভাইভ'এর পরিবেশবিদ লিমোর গ্রুবার বলেন, ‘‘এই পদ্ধতি একদিকে প্রাকৃতিক ও উন্নতমানের এবং পাশাপাশি এর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য তেমন কোনো খরচ নেই বললেই চলে৷''

প্রতিবেদন: ভানেসা ও'ব্রিয়েন / এএইচ

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য